৭ম দফায় সাধারণ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে সরকার

0 171

দেশজুড়ে মহামারি করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে টানা সপ্তম দফায় সাধারণ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে সরকার। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পরই ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করে সরকার। একইসঙ্গে সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। যা পরবর্তীতে আরও কয়েক দফায় বাড়িয়ে এখনও চলমান আছে।

কিন্তু দীর্ঘ লকডাউন আর সাধারণ ছুটিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষত মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ মাসের পর মাস কর্মহীন ঘরে বসে থেকে হাতের সব পুঁজি খুইয়েছেন। এখন তাদের চোখে অন্ধকার। এছাড়া করোনার প্রাদুর্ভাবে গোটা দেশে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় তা জাতীয় অর্থনীতিতেও হুমকি হয়ে উঠেছে।

ফলে ঈদ পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে লকডাউন ও সাধারণ ছুটি উঠিয়ে নেয়ার ব্যাপারে সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক মন্ত্রী গণমাধ্যমকে এমনটিই ইঙ্গিত করেছেন।

তারা বলেছেন, করোনায় সংক্রমণ প্রতিদিনই বাড়ছে। আবার সবকিছু বন্ধের কারণে মানুষের জীবনও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি শেষ হওয়ার পর জুনের শুরু থেকে ছুটি ও লকডাউন তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

অন্য সকল ক্ষেত্রে লকডাউন ও সাধারণ ছুটি তুলে নিলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তারা। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে আগামী ২ সপ্তাহে কোন দিকে যায় দেশের করোনা পরিস্থিতি তার ওপর।

এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘ঈদ পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে। সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে লকডাউন উঠানো বা না উঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ঈদ পর্যন্ত পরিস্থিতি কি হয় তার উপর সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে।’

কৃষিমন্ত্রীর কথার সঙ্গেই সুর মিলিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর প্রথম দফায় সাধারণ ছুটি ছিল ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল। দ্বিতীয় দফায় সেটি বাড়িয়ে ১১ এপ্রিল, তৃতীয় দফায় বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল, চতুর্থ দফায় বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল, পঞ্চম দফায় বাড়িয়ে ৫ মে, ষষ্ঠ দফায় বাড়িয়ে ১৬ মে ও সবশেষ সপ্তম দফায় সেই সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে ৩০ মে পর্যন্ত ঘোষণা করে সরকার।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম মৃত্যুর সংবাদ আসে ১৮ মার্চ। এরপর মার্চ মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু নাগালের মধ্যে থাকলেও এপ্রিলের শুরু থেকেই বিশেষত এপ্রিলের মাঝামাঝির পর থেকে ব্যাপক হারে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৯৯৫ জন হয়েছেন। মারা গেছেন ৩১৪ জন, সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ১১৭ জন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.