বেসরকারি ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স (এনসিসি) ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোসলেহ উদ্দিন আহমেদের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
কমিশনকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছে বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। গত মঙ্গলবার ওই চিঠি দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থার জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য।
বিএফআইইউয়ের বিশেষ অনুসন্ধানে ব্যাংকের ঋণগ্রহীতার টাকা ছাড়াও পরামর্শক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং শেয়ারবাজার থেকেও মোসলেহ উদ্দিন আহমেদের ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বিএফআইইউয়ের তদন্ত অনুযায়ী, পাঁচ ব্যাংক, দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও চারটি ব্রোকারেজ হাউসে এনসিসি ব্যাংকের এমডির প্রায় ৩৫ কোটি টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে এনসিসি ব্যাংক ভবন শাখায় তাঁর হিসাবে প্রতি মাসের বেতন বাবদ জমা হয় ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৪০ টাকা। তবে ওই শাখাতেই তিনি একটি বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব খোলেন, যাতে বিভিন্ন সময়ে জমা হয় পাঁচ হাজার ডলার। গত ৩১ জানুয়ারি জমা হয় আট হাজার ডলার।
২০১৫ সালের শেষে এনসিসি ব্যাংকে যোগদান করলেও মোসলেহ উদ্দিনের যমুনা ব্যাংকের হিসাবে নিয়মিত টাকা জমা হয়েছে। যমুনা ব্যাংকে নিজের নামে একটি ও স্ত্রী লুনা শারমিনের সঙ্গে যৌথ একটি হিসাব রয়েছে। এতে জমা হয়েছে যথাক্রমে ছয় কোটি ও সাড়ে তিন কোটি টাকা। এভাবে যমুনা ব্যাংকের হিসাবে সাড়ে ৯ কোটি টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে যমুনা ও এনসিসি ব্যাংকের গ্রাহক ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং একাই দিয়েছে চার কোটি টাকা। এই টাকা জমা হয়েছে ২০১৮ সালের ৫, ১২, ১৫ ও ২৫ এপ্রিল।
দি সিটি ব্যাংকে মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, তাঁর স্ত্রী লুনা শারমিন ও তাঁদের যৌথ মিলিয়ে তিনটি হিসাব রয়েছে। এসব হিসাবে বিভিন্ন সময়ে জমা হয়েছে সাড়ে ছয় কোটি টাকা। প্রাইম ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং শাখায় তাঁর নামে থাকা হিসাবে জমা হয়েছে চার কোটি ৩৩ লাখ টাকা। প্রিমিয়ার ব্যাংকে থাকা হিসাবে জমা হয়েছে দুই কোটি আট লাখ টাকা। এ ছাড়া রিলায়েন্স ফাইন্যান্সে তাঁর নামে রয়েছে চার কোটি টাকা ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে দুই কোটি টাকার মেয়াদি আমানত। পাশাপাশি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে নিজের নামে চারটি ব্রোকারেজ হাউসে হিসাব খুলেছেন মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। এসব হিসাবে জমা রয়েছে দুই কোটি ২৬ লাখ টাকা। ব্রোকারেজ হাউসগুলো হলো সিটি ব্রোকারেজ, এনসিসি ব্যাংকের সিকিউরিটিজ, সিএসএমএল সিকিউরিটিজ ও ই-সিকিউরিটিজ।